নয়া শতাব্দী অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি।
ঈমান গ্রহণের পর নামাজ মুমিনের সবচে বড় ইবাদত। নামাজ মুমিনের অন্তরে প্রশান্তি আনে। যে কারণে মুমিন নামাজে নিয়োজিত থাকে। নামাজ ছেড়ে কোনো মুমিনই থাকতে পারেন না। নবিজী (সা.) জীবনের অন্তিমমুহূর্তেও নামাজের প্রতি বিশেষ তাগিদ দিয়েছেন। এ নামাজই মুমিনের অন্তরে প্রশান্তির অন্যতম মাধ্যম। আল্লাহ তাআলা কোরআনে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা নামাজ প্রতিষ্ঠা কর।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ৪৩)
জামাতে নামাজ আদায়ের সময় কখনও কখনও ইমামেরও ভুল হয়ে যেতে পারে। নামাজে ইমাম ভুল করলে মুসল্লিদের কর্তব্য লোকমা দিয়ে শুধরে দেওয়া। ইমামকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া যে, তার ভুল হচ্ছে। ইমামের ভুল হলে আল্লাহু আকবার নয়; বরং সুবহানাল্লাহ বলে লোকমা দেয়া সুন্নাহ। কেননা একাধিক হাদিসে সুবহানাল্লাহ বলে লোকমা দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে।
সাহল ইবনু সাদ (রা.) বলেন, আমর ইবনু আওফ গোত্রের কিছু লোকের মধ্যে সামান্য বিবাদ ছিল। তাই নবী (সা.) তার সাহাবিদের একটি জামাত নিয়ে তাদের মধ্যে আপস-মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য সেখানে গেলেন। এদিকে সালাতের সময় হয়ে গেল। কিন্তু নবী (সা.) মসজিদে নববীতে এসে পৌঁছেননি। বিলাল (রা.) সালাতের আজান দিলেন, কিন্তু নবী (সা.) তখনও এসে পৌঁছেননি। পরে বিলাল (রা.) আবু বকর (রা.)-এর কাছে এসে বললেন, নবী (সা.) কাজে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এদিকে সালাতেরও সময় হয়ে গেছে। আপনি সালাতে লোকদের ইমামতি করবেন? তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, তুমি যদি ইচ্ছা কর।’
তারপর বিলাল (রা.) সালাতের ইকামত বললেন, আর আবু বকর (রা.) এগিয়ে গেলেন। পরে নবী (সা.) এলেন এবং কাতারগুলো অতিক্রম করে প্রথম কাতারে এসে দাঁড়ালেন। (তা দেখে) লোকজন হাততালি দিতে শুরু করল এবং তা অধিক মাত্রায় দিতে লাগলেন। আবু বকর (রা.) সালাত অবস্থায় কোনো দিকে তাকাতেন না, কিন্তু (হাততালির কারণে) তিনি তাকিয়ে দেখতে পেলেন যে, নবী (সা.) তার পেছনে দাঁড়িয়েছেন। নবী (সা.) তাকে হাতের ইশারায় আগের মতো সালাত আদায় করতে নির্দেশ দিলেন। আবু বকর (রা.) তার দু’হাত ওপরে তুলে আল্লাহর হামদ বর্ণনা করলেন। তারপর কিবলার দিকে মুখ রেখে পেছনে ফিরে এসে কাতারে শামিল হলেন।
তখন নবী (সা.) আগে বেড়ে লোকদের ইমামত করলেন এবং সালাত সমাপ্ত করে লোকদের দিকে ফিরে বললেন, ‘হে লোক সকল! সালাত অবস্থায় তোমাদের কিছু ঘটলে তোমরা হাততালি দিতে শুরু কর। অথচ হাততালি দেওয়া নারীদের কাজ। সালাত অবস্থায় কারো কিছু ঘটলে সে যেন ‘সুবহানাল্লাহ’ বলে। কেননা এটা শুনলে তার দিকে দৃষ্টিপাত না করে পারত না।
‘হে আবু বকর! তোমাকে যখন ইশারা করলাম, তখন সালাত আদায় করাতে তোমার কিসের বাধা ছিল?’ তিনি বললেন, ‘আবু কুহাফার পুত্রের জন্য শোভা পায় না নবী (সা.) এর সামনে ইমামতি করা। (সহিহ বুখারি : ১২১৮)
এই দীর্ঘ হাদিসে ‘সালাত অবস্থায় কারো কিছু ঘটলে সে যেন ‘সুবহানাল্লাহ’ বলে অংশটি প্রমাণ বহন করে যে, লোকমা দেয়ার সুন্নাহ পদ্ধতি হলো সুবহানাল্লাহ বলা।
লোকমা দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা উত্তম। তবে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে লোকমা দিলেও নামাজের কোনো ক্ষতি হবে না। আর ইমাম যদি কেরাত পড়ার সময় আটকে যান বা ভুল করেন, তা হলে মুক্তাদিদের কেউ সেই কেরাত ঠিক করে পড়ে ইমামকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া নিয়ম। (আহকামে জিন্দেগি : ২১৫)
নয়া শতাব্দী/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ