নয়া শতাব্দী অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে জমে উঠেছে ক্ষীরার মৌসুমি হাট। উপজেলার দিঘুড়িয়া গ্রামে গড়ে উঠেছে সবচেয়ে বড় ক্ষীরার মৌসুমি হাট। এ হাটে প্রতিদিন ঢাকা, রাজশাহী, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকার এসে ক্ষীরা কিনে নিয়ে যান।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৪৭০ হেক্টর জমিতে ক্ষীরা চাষ করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ৩০ হেক্টর বেশি। কিন্তু সঠিক দাম না পাওয়ায় হাসি নেই কৃষকের মুখে। গত বছরের তুলনায় অর্ধেক দামে ক্ষীরা বিক্রি করছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, তাড়াশ উপজেলার কোহিত, তালম সাতপাড়া, সাচানদিঘি, সান্দুরিয়া, খোসালপুর, বারুহাস, নামো সিলট, দিঘড়িয়া, দিয়ারপাড়া, খাসপাড়া, রানীদিঘী, তেঁতুলিয়া ও বরগ্রামে মাঠের পর মাঠ ক্ষিরার আবাদ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে বারুহাস ইউনিয়নে। দিঘুড়িয়া এলাকায় ক্ষীরা বিক্রি করার জন্য মৌসুমী ব্যবসায়ীরা গড়ে তুলেছে সবচেয়ে বড় আড়ৎ। প্রতিদিন ভোর থেকে বিভিন্ন গ্রামের কৃষকেরা এই আড়ৎ এ ক্ষীরা আনেন বিক্রি করার জন্য। বিভিন্ন জেলার পাইকাররা ও স্থানীয় পাইকাররা ক্ষীরা কিনতে আসেন এই আড়ৎ এ। সাধারণত দুপুরের পর শুরু হয় ট্রাক লোড, এরপর ট্রাক যোগে ঢাকা, রাজশাহী, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় এই ক্ষীরাগুলো চলে যায়। প্রতিদিন প্রায় ৫০ থেকে ৬০ টন ক্ষীরা যাচ্ছে ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে।
বারুহাস ইউনিয়নের তেতুলিয়া গ্রামের ক্ষীরা চাষি মকুল বলেন, ফলন বাম্পার হয়েছে, তবে দাম কম পাচ্ছি, গত বছরের চেয়ে অর্ধেক দামে ক্ষীরা বিক্রি করছি। সাধারণত ১ বিঘা জমিতে চাষে খরচ হয় ২০ হাজার টাকার মতো। গত বছর এক বস্তা (৪০কেজি) ক্ষীরা বিক্রি হতো ১১০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা। যা বর্তমানে ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। যদি এভাবেই চলতে থাকে তাহলে লাভের মুখ দেখবো না।
রানীদিঘী গ্রামের কৃষক সোহাগ রানা বলেন, গত বছর ১ বিঘা জমিতে ক্ষীরা চাষ করেছিলাম লাভ ভালোই হয়েছিল তাই এ বছরও ১ বিঘায় ক্ষীরা চাষ করেছি। ফলন ভালো হলেও দাম পাচ্ছি না।
সান্দ্রা গ্রামের কৃষক হোসেন আলী বলেন, আমি তিন বছর ধরে ক্ষীরার চাষ করে আসছি। অন্য ফসলের চেয়ে ক্ষীরা চাষে লাভ বেশি হওয়ার কারণে প্রতি বছরই ক্ষীরা চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৮০ থেকে ১০০ মণ করে ক্ষীরার ফলন হবে বলে আশা করছি।
বারুহাস ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ময়নুল হক জানান, দিঘুড়িয়া আড়ৎ থেকে বিভিন্ন জেলার পাইকাররা ট্রাকে করে ক্ষীরা কিনতে আসেন। এলাকার ক্ষীরা সাধারণত ঢাকা, রাজশাহী, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যায়। এ আড়ৎ থেকে শুধু রাজধানী ঢাকায়, প্রতিদিন ৪৫ থেকে ৫০ মে. টন ক্ষীরা যাচ্ছে।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উপজেলার ফসলি জমি ক্ষীরা চাষের উপযোগী। কৃষি অফিসের লোকজন সার্বক্ষণিক কৃষকদেরকে ক্ষীরা চাষে উৎসাহ, পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সহযোগিতা করে আসছেন। কৃষকরা অন্যান্য কৃষি দ্রব্যের তুলনায় ক্ষীরা চাষে লাভবান হতে পারেন।
নয়াশতাব্দী/জেডএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ