নয়া শতাব্দী অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি।
প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করছেন এরশাদ মিয়া। দিনে আয় হয় প্রায় ১ হাজার টাকা। সংসারও চলে ভালো, আয়ও হয় বেশ। মাস শেষে জমছে কিছু টাকা। আর ফুটছে মুখে হাসি।
এরশাদ মিয়ার বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইলের চরবেতাগৈর ইউনিয়নের চরউত্তরবন্দ গ্রামে। পিতা মৃত হাসিম উদ্দিন। স্ত্রী ও চার সন্তান নিয়ে ভালোই আছেন এরশাদ। সন্তানদের পড়াশোনার খরচও চলে পিঠার টাকায়।
৩ বছর ধরে পিঠা বিক্রি করছেন এরশাদ মিয়া। বানাচ্ছেন সুস্বাদু চিতই ও ভাঁপা পিঠা। সঙ্গে তিন-চার পদের ভর্তা তো আছেই। বাড়িতেই চালের গুঁড়া কুটেন। সেই গুঁড়া থেকেই তৈরি করেন স্বাদের চিতই ও ভাঁপা পিঠা। এরশাদের পরিচ্ছন্নতা নজর কাড়ার মতো। তাই ক্রেতার আগ্রহ বেশি এখানে। অনেকে আবার দলবেঁধে পিঠা খেতে আসেন এখানে।
প্রতিটি চিতই এবং ভাপা পিঠা বিক্রি হয় ১০ টাকায়। ভাপা পিঠা মুখরোচক করতে খেজুরের গুড়, নারিকেল দেওয়া হয়। চিতই পিঠার স্বাদ বাড়াতে সরষে বাটা, ধনে পাতার ভর্তা, শুঁটকি ভর্তা, মরিচের ঝালের ব্যবস্থা আছে। মুখরোচক হওয়ায় দলবেঁধে নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধসহ সকল শ্রেণির মানুষ মজা করে পিঠা খেতে আসেন।
সন্ধ্যার পরে ভিড় লেগে যায় দোকানে। উত্তরবন্দ বাজারে এরশাদের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে অনেককেই দেখা যায় পিঠা খেতে।
সরেজমিন মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে চরউওরবন্দ বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, এরশাদ মিয়া বাজারে বসে পিঠা বিক্রি করছেন। তিনটি চুলায় তিনি পিঠা বানাচ্ছেন। চারদিকে পিঠা খেতে আগ্রহী লোকজন ভিড় জমিয়েছেন। কেউ বসে কেউ বা দাঁড়িয়ে পিঠা খাচ্ছেন। এই দৃশ্য চোখে পড়ার মতো ব্যাপার।
পিঠা হাতে নিয়ে একজন করে বের হচ্ছেন আর অন্যরা পিঠা নিতে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। কেউ আবার চেয়ারে বসে অপেক্ষা করছেন। এসব দোকানে সকাল ও সন্ধ্যার পর ভিড় জমায় সকল শ্রেণি পেশার মানুষ।
কার্তিক মাস থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত এই পাঁচ মাস এরশাদ মিয়া পিঠা বিক্রি করেন। প্রতিদিন তার পিঠার দোকানে ভালোই বিক্রি হয়। পিঠা বানিয়ে তিনি কুলোতে পারেন না। অনেকেই অপেক্ষা করে পিঠা না পেয়ে চলে যান। অনেকে বাড়ির জন্যও নিয়ে যান।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা খোকন মিয়া বলেন, এরশাদ মিয়ার দোকানে আমি প্রতিদিন পিঠা খাই। অনক স্বাদের পিঠা। খেতে আমার কাছে ভালোই লাগে।
স্থানীয় সোহেদ, শামছুল, রিপন, জসিম, আলামিন ও সুমন জানান, এরশাদ মিয়ার দোকানে পিঠা খাওয়ার জন্য অনেক ভিড় থাকে। তবুও আমরা অপেক্ষা করে চিতই এবং ভাপা পিঠা খাই। এ এক অন্যরকম আনন্দ।
বীরকামট খালী দক্ষিণ বাজারের পল্লী চিকিৎসক মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি প্রতিদিন এরশাদের দোকান থেকে পিঠা কিনে খাই। তার বানানো পিঠার মান ভালো। তাই কিনে থাকি।
এরশাদ মিয়া জানান, অধিকাংশ মানুষের পছন্দের পিঠা হলো ভাপা ও চিতই পিঠা। এই পিঠার কদর সবচেয়ে বেশি। প্রতি পিস চিতই পিঠা ও ভাপা পিঠা ১০ টাকা করে বিক্রি করি। প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করি। এতে আমার ১ হাজার টাকার মতো আয় হয়।
নয়া শতাব্দী/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ