নয়া শতাব্দী অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি।
দেশের নির্বাচন ব্যবস্থার নানা তথ্য-উপাত্ত নিয়ে ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ তৈরি করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ যাত্রার অংশ হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এ অ্যাপ তৈরির পথে হাঁটছে ইসি।
এ অ্যাপ ব্যবহার করে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিলের পাশাপাশি নির্বাচনসংক্রান্ত সব খুঁটিনাটি বিষয়, ভোটাররা ভোটকেন্দ্র, ভোটার নম্বর, কেন্দ্রের বুথসহ নির্বাচনে প্রার্থী কারা প্রার্থী, নির্বাচনি এলাকার ম্যাপ, কোথায় কত ভোট পড়ল ও তার গ্রাফ, ফিগার; কোন প্রার্থী কোথায় এগিয়ে থাকল— এসব তথ্য খুঁজতে ও দেখতে পারবেন।
জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর নয়া শতাব্দীকে বলেন, আমরা আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুন্দর এবং সহজ করতে অনেক উদ্যোগ নিচ্ছি। এরই অংশ হিসেবে অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে। এটি তৈরি হয়ে গেলে আমরা অনেক সুফল পাব।
অ্যাপের ফিচার সম্পর্কে ধারণা দিয়ে তিনি বলেন, অ্যাপে সব ভোটারের তথ্য থাকবে। ভোটাররা অ্যাপে ঢুকে জানতে পারবেন তিনি কোন এলাকার ভোটার। কোন কেন্দ্রে এবং কোন বুথে তাকে ভোট দিতে হবে। এছাড়া ভোটাররা তার কেন্দ্রে কোন পদে কত প্রার্থী, প্রার্থীর নাম, ছবি ও প্রতীক— সব দেখতে পারবেন।
প্রার্থীদের সুবিধার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আলমগীর বলেন, প্রার্থীরা চাইলে অনলাইনে মনোনয়ন জমা দিতে পারবে। অ্যাপে সব প্রার্থীর হলফনামা থাকবে। ফলাফল ঘোষণার সময় প্রার্থীরা অ্যাপে দেখতে পাবেন তারা কে কোন কেন্দ্রে কত ভোট পেয়েছেন। এছাড়া কোন দল কত ভোট পেয়েছে সেটিও অ্যাপে দেখা যাবে। তবে এসব বিষয়ে কমিশন আলোচনা করছে যাচাই-বাছাই চলছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে কমিশন বৈঠকে থেকে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান বলেন, আগামীতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের শুধু অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার বিধান করতে চাইছে ইসি। তিনি বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত। এখন স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে সবখানেই সব ধরনের আবেদনই অনলাইনে সাবমিশন হচ্ছে। অনলাইনে সাবমিশন স্বচ্ছতা ও সঠিকতার বহিঃপ্রকাশ। জনপ্রতিনিধিরা শোডাউন ও স্লোগান দেয়ার মাধ্যমে মনোনয়ন জমা দেয়ার সময় প্রথম দিনেই আচরণবিধি লঙ্ঘন করেন।
আবার প্রভাবশালী প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে— অন্য যারা মনোনয়ন জমা দিতে যান তাদের কাউকে কাউকে বাধা দেয়া হয়। এমন বাধা উপেক্ষা করে অনেকের পক্ষেই নির্ধারিত সময়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারেন না। ফলে কোথাও কোথাও বিস্ময়করভাবে একক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা হয়!
খেলার মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বী নেই— এমন জয়লাভে আনন্দ কোথায় প্রশ্ন রেখে আহসান হাবিব বলেন, এসব দুষ্টুমিপনা রুখতে অনেক চিন্তাভাবনা করেই জন্য ইসির আইসিটি অনুবিভাগ একটি প্রেজেন্টেশন দিয়েছে। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার ক্ষেত্রে কেউই যেন অসুবিধার সম্মুখীন না হন— সেটি বিবেচনা করা হচ্ছে।
আহসান হাবিব বলেন, প্রথমে এটির পাইলটিং করা হবে। ব্যবহারিক ক্ষেত্রে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ আসে তা দেখে ফিচারে প্রয়োজনীয় সংশোধন-বিয়োজন-পরিমার্জন করা হবে।
তিনি জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের ছোট ছোট নির্বাচনে নতুন উদ্যোগের পাইলটিং হবে। প্রথমে ইউনিয়ন পরিষদ, তারপর উপজেলা, সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও পাইলটিং আকারে তা ব্যবহার করা হবে। এগুলোতে সুফল মিললে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
ইসির আইসিটি অনুবিভাগ সূত্র জানায়, অ্যাপ তৈরির বিষয়টি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। টেকনিক্যাল কমিটি কাজ করছে। টেকনিক্যাল কমিটির মতামত ও কমিশনের চূড়ান্ত অনুমোদন মিললে খুব দ্রুতই অ্যাপ আনা সম্ভব হবে। এরই মধ্যে জনশুমারির চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় প্রশাসনিক পরিবর্তন হয়েছে। অ্যাপ চূড়ান্ত করার আগে আমাদের সেগুলো নিয়েও বসতে হবে।
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ