ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ৯ চৈত্র ১৪২৯, ৩০ শাবান ১৪৪৪
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় 

হরেক রঙের ফুল জানান দিচ্ছে- বসন্ত এসে গেছে

প্রকাশনার সময়: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৬:৩৩

প্রকৃতিতে বইছে বসন্তের হাওয়া। ফুলে ফুলে সেজেছে প্রকৃতির কোল। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ঋতুরাজ বসন্তের আবাহণ নিয়ে লিখেছেন স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আলমগীর হোসেন।

‘গাছে গাছে নতুন পাতা- ফুল ফুটেছে বেশ।

সব পাখির মন খারাপ- শীতের হল শেষ।

নতুন রুপে, নতুন সাঁজে- নিভাবে মনের আগুন।

তাইতো আজ প্রকৃতি জুড়ে বসন্তের ফাল্গুন।’

কোকিলের কুহুতান নাকি আমের মুকুল— কে নিয়ে আসে বসন্তের আগমনী বার্তা? উত্তর খুঁজতে গেলে কিছুটা দ্বিধায় পড়তে হবে। তবে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুলগাছগুলোর দিকে তাকালে দূর হবে মনের সন্দিহান। দখিনা মিষ্টি বাতাসের ছন্দে ছন্দে ফুলগুলো যেন বলে যায় ‘বসন্ত এসে গেছে’।

ফুলের সঙ্গে বসন্তের প্রেম বেশ গভীর। এই ঋতুতে দখিনা বাতাসের মাধ্যমে ফুলের রেণু ছড়িয়ে পড়ায় ফুল বেশি হয়। যে ফুল দিয়ে আপন সৌন্দর্যে সাঁজে প্রকৃতি, হয়ে ওঠে চঞ্চল। শীতের খোলস ছাড়িয়ে নবরূপে জাগ্রত হয় বৃক্ষরাজি। পলাশ, শিমুল আর কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙে রঙিন হয়ে ওঠে গ্রাম-শহর, বন-বাদার। প্রকৃতিতে যেন রঙের আগুন লাগে। গাঁদা ফুলের বাসন্তি রঙও বসন্তের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দেয়। এমনকি ঘাসের ওপরও এসময় পা ফেলতে হয় সাবধানে। কারণ সেখানে ফুটে থাকে গুল্ম ফুল। পরিত্যক্ত জলাশয়ের বুকেও কলমি ফুল উঁকি দিয়ে জানান দেয়, প্রকৃতিকে সাজাতে পিছিয়ে নেই তারাও।

নিষ্প্রাণ প্রকৃতির বুকে নতুন করে প্রাণের সঞ্চার করায় বসন্তকে বলে ঋতুরাজ। শীতে যে গাছের পাতা ঝরে পড়ে, তাতে আবার নতুন পাতা গজায় এই ঋতুতে। চারদিক মুখরিত হয়ে ওঠে ফুল আর প্রজাপতির কলতানে।

ব্যতিক্রম নয় নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ও। ফাগুনের ফুলে ফুলে সেজেছে বিদ্রোহী কবির নামে প্রতিষ্ঠিত এই নজরুল তীর্থ।

বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন স্থানে গড়ে তোলা হয়েছে নানা রকমের ফুলের বাগান। বাগানে থরে থরে ফুটেছে গাঁদা, ডালিয়া, স্টার, রক্ত গাঁদা, পিটুনিয়া, পলাশ, গোলাপ, কচমচ, মোরগ ঝুঁটিসহ হরেক প্রজাতির ফুল। বিশেষ করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাস্কর্যের পাদদেশ ভরে উঠেছে হরেক রকম ফুলে। এছাড়াও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, অগ্নিবীণা হল, বঙ্গমাতা বেগম ফজিল্লাতুন্নেছা হল, দোলন-চাঁপা হল, কদম তলা, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, ব্যবসা প্রশাসন অনুষদ, দুখু মিয়া নামক উপাচার্য বাংলো প্রভৃতিকে বিভিন্ন জাতের ফুল মিশ্র সৌরভে মাতিয়ে রেখেছে। সেই সৌরভে রঙিন হয়ে উঠেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের হৃদয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা মেতে উঠছে আনন্দ-উৎসবে। ফুলের বাগান নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যকে বাড়িয়েছে বহুগুণ। শিক্ষার পরিবেশকে করেছে সৌন্দর্যমণ্ডিত।

প্রকৃতির ফুল-পাতা দিয়ে গড়া ফুলের স্বর্গরাজ্য নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ঊষা ও গোধুলি বেলায় হাঁটলে যেমন চোখ জুড়ায়, তেমনি প্রাণ জুড়ায় সুবাসে। তাই প্রতিদিন ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ছুটে আসছেন অসংখ্য দর্শনার্থী। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর থাকে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাস। বন্ধু-বান্ধব, পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে ক্যাম্পাসে আসা তাদের কেউ ছবি তুলেন, কেউবা নীরবে প্রকৃতির সৌন্দর্য্যের স্বাদ আস্বাদন করে ফিরে যান।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ