শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১৮ চৈত্র ১৪২৯

রাবি শিক্ষার্থী কৃষ্ণ রায়কে মারধর ও হত্যার হুমকির প্রতিবাদে মানবন্ধন

প্রকাশনার সময়: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৫:৫৩

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী কৃষ্ণ রায়কে ছাত্রলীগের মারধর ও হত্যার হুমকির প্রতিবাদ করেছে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের সামনে এক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে প্রতিবাদ জানান তারা। সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মসূচিতে বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন নির্যাতনের ঘটনা প্রতিনিয়ত দেখা যায়। ছাত্রলীগ টাকার বিনিময়ে, অথবা তাদের কর্মীকে হলে তুলে। যেখানে একজন সাধারণ শিক্ষার্থী তার নৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। কৃষ্ণ রায় একজন হিন্দু শিক্ষার্থী। তাকে জামাত শিবির আখ্যা দিয়ে নির্যাতন করে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। সন্ত্রাসীদের কোনো সংগঠন হয় না। তারা যে সংগঠনে যায় সেটিই একটি সংগঠন। বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা শৃঙ্খলা কমিটি আছে। কিন্তু বিগত চার বছরে তাদের কোনো কার্যক্রম দেখি নাই। আশা করছি তারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গত দীর্ঘকাল ধরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে পরিবেশ তৈরি হয়েছে তা শিক্ষার অনুকূল না। বসবাসের যে হলগুলো আছে সেগুলো বসবাসের উপযোগী না। সেখানে ছাত্রলীগের নাম নিয়ে অসংখ্য নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। এখানে কোনো বিচার হয় না। মানুষ সম্মানসহ বাস করতে পারছে না। যারা আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগের সাথে জড়িত তারা কিছু সম্মান নিয়ে বাঁচে। তাছাড়া আর কারও সম্মান নাই।

অধ্যাপক মোজাম্মেল হোসেন সাজ্জাদ বকুল বলেন, কৃষ্ণ রায়ের সাথে হলে ঘটা নির্যাতনের খবরে আমরা মর্মাহত। শিক্ষার্থীরা যে আবাসিক হলে থাকেন, সেগুলো মাঝে মাঝে নির্যাতনের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। গেস্টরুমে নির্যাতনের কথা আমরা শুনেছি। গেস্টরুম নির্যাতনের যখন বিচার হয় না, তখন তা ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন রুমে। যারা অপরাধ করছে, কোনো ছাত্র সংগঠনের লেজুড়বৃত্তি তাদের রক্ষা করতে পারে না। যারা এসব কর্ম করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ বাকী বলেন, কিছু অসাধারণ ছাত্র-ছাত্রী সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর করে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে এখন দুই ভাগ হয়ে গেছে। একদল সাধারণ আরেকদল অসাধারণ। কৃষ্ণকে শিবির বলে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হলে টর্চার সেল আছে। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে কিছু ঘর আছে যেগুলো আপোষ, মিমাংসা, সালিশ এসব কেন্দ্র। শৃঙ্খলা কমিটি আছে, আইনকানুন, নিয়ম আছে। আমার বোধে আসে না, নিয়মের বাইরে গিয়ে এমন আপোষ, শান্তি বজায় রাখা, মিমাংসা করে দেওয়া। এতো শান্তিপূর্ণ পরিবেশ আমাদের জন্য অশান্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত রোববার দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলে আটকে রেখে কৃষ্ণ রায়কে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠে হল শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে। সেইসঙ্গে মেরে ‘শিবির’ বলে চালিয়ে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয় ওই শিক্ষার্থীকে। অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ নেতা হলেন- হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলাম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সোলাইমান। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে হল প্রাধ্যক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ