ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩, ১৪ চৈত্র ১৪২৯, ৫ রমজান ১৪৪৪

রাবি শিক্ষার্থীদের ‘ধুয়ে দেই’ প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট চালু

প্রকাশনার সময়: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২৩:২৭

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পরিসংখ্যান বিভাগের চার বন্ধুর কাপড় ধোয়ার প্রতিষ্ঠান ‘ধুয়ে দেই’ এর ওয়েবসাইট চালু হয়েছে। সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার জগদীশচন্দ্র বসু অ্যাকাডেমিক ভবনে পরিসংখ্যান বিভাগের গ্যালারিতে এই ওয়েবসাইটের নতুন যাত্রা শুরু হয়।

রাজশাহী শহরের যেকোনো স্থান থেকে এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অর্ডার করা হলে বাসা থেকে কাপড় সংগ্রহ করে মাত্র ২৪ ঘণ্টায় ডেলিভারি দিবে ‘ধুয়ে দেই’ নামক প্রতিষ্ঠানটি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল আবাসিক হলের শিক্ষার্থী ব্যতিত অন্য সবাইকে ডেলিভারির জন্য চার্জ গুণতে হবে।

অনুষ্ঠানে ‘ধুয়ে দেই’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী সালমান খান ফারসি বলেন, যেদিন থেকে এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু করেছি, গ্রাহককে আমরা সর্বোচ্চ সুবিধা দিতে চেষ্টা করেছি। বর্তমানে আমরা রাজশাহীজুড়েই সেবা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছি। মানুষ যাতে সহজে সেবা নিতে পারে এ উপলক্ষেই ওয়েবসাইট তৈরি করেছি।

পরিসংখ্যান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সবার একটা ধারণা হয়ে গেছে যে আমরা যে বিষয়ে পড়াশোনা করছি সে বিষয়ে চাকরি নেয়া লাগবে। আমরা সবাই চাকরির পেছনে ছুটে বেড়াই কিন্তু চাকরি দেবার মানসিকতা আমাদের কারও মধ্যে থাকে না। এতে শিক্ষিত বেকার দিন দিন বেড়ে চলেছে। আমাদের উদ্যােক্তা হওয়ার চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। চ্যালেঞ্জ শুধু উদ্যক্তো হবার ক্ষেত্রে নয়, পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্র সর্বক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ না নিতে পারলে কোনো কাজে সফল হওয়া যায় না। কিন্তু আমার বিভাগের শিক্ষার্থীরা সে চ্যালেঞ্জ নিয়ে আজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। তারা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এখন সেবা দিবে।

পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক মনিমুল হক বলেন, ধুয়ে দেই’য়ের কথা প্রথম যেদিন শুনি একটা আলাদা ভালোলাগা কাজ করেছিল। বাংলাদেশে প্রতি বছর সাড়ে চার থেকে পাঁচ লাখ গ্রাজুয়েট বেকার তৈরি হয়। দেশে শিক্ষিত বেকার আছে ৩২ লাখের বেশি। বিপুল সংখ্যক এই বেকারকে সরকারের চাকরি প্রদান করা সম্ভব না। দেশে যদি কমপক্ষে এক লাখ উদ্যোক্তা তৈরি করা যায় তবে তাদের অধীনে আরও ৩০ লাখ যুবকের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। ধুয়ে দেই ভিন্নভাবে কাজ করছে। তাদের সাথে আরও কয়েকজনের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। উপস্থিত সকলকে অনুরোধ করব নিজেরা সবসময় নতুন কিছু তৈরির মাধ্যমে উদ্যোক্তা হবার চেষ্টা করবেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগের অধ্যপক দুলাল চন্দ্র রায়। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য সদস্য এবং বিভিন্ন বিভাগের প্রায় অর্ধ-শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ‘ধুয়ে দেই’র যাত্রা শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চার শিক্ষার্থী সালমান খান ফারসি, হামিম শেঠ, অভিষেক বিশাল চৌধুরী ও পলাশ বিন ফারুক। ফ্রি হোম ডেলিভারির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ছাত্রদের কাপড় ধুয়ে দেওয়া এবং লন্ড্রি করে দেওয়াই ছিল তাঁদের কাজ। প্রতিদিনের হাতখরচ থেকে বাঁচিয়ে এক বছরের জমানো অর্থ দিয়ে উদ্যোগটি শুরু করেন তারা। তাদের ফেসবুক পেজের নাম ‘ধুয়ে দেই’। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাপড় ধোয়ার অর্ডার নিয়ে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা ডেলিভারি দেওয়া হয়।

নয়াশতাব্দী/জেডআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ