নয়া শতাব্দী অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি।
বিশিষ্ট নগর পরিল্পনাবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেছেন, ঢাকা শহর অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। দুর্যোগ ঝুঁকি নিয়ে এ শহরে বাস করছে দেড়কোটি মানুষ। নগরীর ৬৫ শতাংশ ভবন দুর্বল মাটির ওপর প্রতিষ্ঠিত। যা ভবন নিরাপত্তা ঝুঁকির অন্যতম কারণ। এভাবে ভবন ধসের ঝুঁকি নিয়ে একটি শহর টিকতে পারে না।
শনিবার (১৮ মার্চ) বাংলাদেশ চলচিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (এফডিসি) অনুষ্ঠিত এক ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, ‘ভবন নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে মানুষের প্রাণহানী ও সম্পদ ক্ষতির ঝুঁকি বাড়বে এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্র অর্জন সম্ভব হবে না। ভবন নিরাপত্তার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান সমূহ যথাযথ দায়িত্ব পালন করছে না। রাজউক অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ভবন নির্মাণ হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে নজরদারীর ঘাটতি রয়েছে। এমনকি নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। ভবন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা, পেশাজীবী ও ভবন মালিক সবাইকে সমন্বিতভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। নিরাপদ ভবন নিশ্চিত করার জন্য মহানগর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও বিল্ডিং কোডের অনুশীলন নিশ্চিত করা জরুরি।
প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, সাইন্সল্যাবরেটরি ও পুরান ঢাকায় বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে কত ভায়াবহ ঝুঁকির মধ্যে আমরা বসবাস করছি। নগর ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের অভাব, অপরিকল্পিত নগরায়ন, বিল্ডিং কোড না মেনে ভবন নির্মাণ, সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলোর অবহেলা, দুর্নীতি ও নাগরিকদের উদাসীনতা ভবন ধসের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে। অভিযোগ রয়েছে রাজউক থেকে নকশার অনুমোদন পেতে এক বছরেরও বেশি সময় লেগে যায়। নির্মাণ শেষে বিল্ডিংয়ের অকোপেন্সি সার্টিফিকেট পেতেও বেশ কষ্ট হয়। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ না করায় ভবন নিরাপত্তাহীনতাসহ নগর দুর্যোগের ঝুঁকি বাড়ছে।
তিনি আরো বলেন, ভবন ধসে যেসব সাধারণ মানুষ, পথচারী আকস্মিকভাবে নিহত ও আহত হচ্ছে তাদের অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর কোন রাষ্ট্রীয় মেকানিজম নেই। কলকারখানার দুর্ঘটনায় আহত-নিহত শ্রমিকরা শ্রমিক কল্যাণ তহবিল ও মালিকদের নিকট থেকে আর্থিক সহযোগিতা পেয়ে থাকে। কিন্তু ভবন ধসে প্রাণ হারানো বা আহত ব্যক্তি বা তাদের পরিবার তেমন কোন আর্থিক সহযোগিতা পায় না। তাই আজ এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিগত সময়ে ভবন ধসের ঘটনায় আহত ও নিহত পরিবারকে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে মানবিক সহায়তা প্রদানের দাবি করছি।
‘মালিকদের উদাসীনতাই ভবন নিরাপত্তাহীনতার প্রধান কারণ’ শীর্ষক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় শরিয়তপুরের মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল এন্ড কলেজকে পরাজিত করে ঢাকার সামসুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজের বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। বিতর্ক প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক অনিমেষ কর, সাংবাদিক ফালগুনী রশীদ ও সাংবাদিক মাহমুদ হাসান। প্রতিযোগিতা শেষে চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ দলকে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ