নয়া শতাব্দী অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি।
টাঙ্গাইলে মায়েদের পা ধুয়ে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস পালন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা দিকে দেড় শতাধিক শিশু তাদের মায়েদের পা ধুয়ে এ ভালোবাসা এবং সম্মান জানিয়েছে।
হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারি স্কুল টাঙ্গাইল শহরের এসপি পার্কে এই ব্যতিক্রম ধরনের আয়োজন করে। পরে প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগেই মায়ের গলায় মেডেল পরিয়ে দেয় সন্তানরা। ভালোবাসা দিবসে প্রেমিক-প্রেমিকাদের মানসিক পরিবর্তনের উদ্দেশ্যেই এভাবে দিনটি পালন করেছে বলে আয়োজকরা জানায়।
ভালোবাসা দিবস শুধু তরুণ-তরুণী যুগল প্রেম নয়। এর বাইরেও কিছু হতে পারে তা দেখিয়ে দিলো টাঙ্গাইলের হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারি স্কুলের ক্ষুদে শিক্ষার্থী। এ দিনটি মাকে উৎসর্গ করলো তারা। টাঙ্গাইল শহরের এসপি পার্কে ৫ম বারের মতো মায়ের প্রতি ভালবাসা ও শ্রদ্ধা জানানোর আয়োজন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
সন্তানের কাছে এমন শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা পেয়ে আবেগে আপ্লুত মায়েরা, আর শিশুরা হয়েছে আনন্দিত।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সরোয়ার আলম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার। হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারি স্কুলের উপদেষ্টা ও টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন,পৌর মেয়র এসএম সিরজুল হক আলমগীর, জেলা শিক্ষা অফিসার লায়লা খানম, টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কাজী জাকেরুল মওলা, রাইট ফেয়ারের চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ সাথী প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চলনা করেন জান্নাত জিরিয়া খান ছোঁয়া।
অংশগ্রহণকারী অভিবাবক ফাতেমা রহমান বলেন, এবার আমার ছেলেকে ভর্তি করেছি। ভর্তি করেই প্রথম বারের মতো আমি তাদের এমন উদ্যোগে অংশ অংশ করতে পেরে আমি খুশি। বিশেষ করে আমার ছেলেও খুশি।
অভিভাবক সিথী বলেন, এরকম অনুষ্ঠান একটি সন্তানের মানসিক পরিবর্তন ও গঠনে সঠিক ভূমিকা রাখবে এবং বড় হয়ে তারা জানবে ভালোবাসা দিবস শুধু বন্ধু বান্ধব, প্রেমিক-প্রেমিকার জন্যই নয়। এই দিনে বাবা মাকে সময় দিতে হবে। তাদের প্রতি ভালোবাসা নিবেদন করতে হবে। আর এই অনুষ্ঠান থেকে নতুন প্রজন্মের শিশুরা তাদের পিতা-মাতার প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য ও শ্রদ্ধা করতে শিখবে।
শিশু শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল তাইয়ুব, আরিবা এবং অরিন বলে, মায়েদের পা দুয়ে আমাদের খুব ভালো লাগছে। প্রতিবারই আমরা মায়েদে পা দুতে চাই।
হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারি স্কুলের চেয়ারম্যান নওশাদ রানা সানভী বলেন, আমরা মনে করি ভালোবাসা দিবসে ভালোবাসা পাওয়ার প্রথম ভাগীদার মা-বাবা। যদিও তাদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের কোন বিশেষ দিন প্রয়োজন হয় না। বিশেষ এই দিনে শিশুদের মনে বাবা-মায়ের প্রতি অটুট ভালোবাসা এনে দিতেই এই আয়োজন করে থাকি।
বর্তমান সময়ে দেখা যায় সন্তানদের অবহেলায় বৃদ্ধ বাবা-মা কে বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হয়। যা খুবই বেদনার। যদিও তাদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের কোন বিশেষ দিনের প্রয়োজন হয় না। তারপরও বিশেষ এই দিনে শিশুদের মনে বাবা-মায়ের প্রতি অটুট ভালোবাসা এনে দিতেই ৫র্থ বারের মতো এ আয়োজন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, এটি একটি ব্যতিক্রমী আয়োজন। শিশুরা তাদের মায়ের পা ধুয়ে সম্মান দেখিয়ে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। এমন অনুষ্ঠান আমি প্রথম দেখলাম। এই সমস্ত ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানকে আমি সাধুবাদ জানাই। তারা যেনো এই ধারা অব্যাহত রাখে।
নয়াশতাব্দী/জেডএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ