ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩, ১৪ চৈত্র ১৪২৯, ৫ রমজান ১৪৪৪

ধর্ষণের অভিযোগ: পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা নিতে আদালতের নির্দেশ

প্রকাশনার সময়: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২২:৪৮

ফরিদপুরে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগ এনে ভাঙ্গা উপজেলা সদরের এক নারী (৩৩) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতে অভিযোগ দিয়েছেন।

সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা হিসেবে গ্রহণের জন্য ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম মো. সজল মাহমুদ (৪০)। তিনি ভাঙ্গা থানায় সহকারি উপপরিদর্শক (এএসআই) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

বাদী পক্ষের আইনজীবী মানিক মজুমদার বলেন, আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা হিসেবে গ্রহণের জন্য ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।

ফরিদপুর ব্লাস্টের সমন্বয়কারী শিপ্রা গোস্বামী বলেন, এ মামলাটি ব্লাস্ট পরিচালনা করবে।

লিখিত অভিযোগে ওই নারী জানান, তিনি অবিবাহিত। তারা দুই বোন ও এক ভাই। মা ও বাবা মারা গেছেন। ২০০৬ সালে তারা দুই বোন জীবিকার তাগিদে সৌদি আরব যান। ওই সময় তার ছোট ভাই কিডনী রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরে তিনি দেশে এসে স্থায়ী ভাবে বাড়িতে বসবাস করে আসছি। গত ২০ অক্টোবর বাড়িতে চুরি হলে থানায় জানাই।

গত ২৪ অক্টোবর এএসআই মো. সজল রাতে বাড়িতে ঢুকে বিভিন্ন কথাবার্তা বলার ছলে তার সাথে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করে। এ ঘটনা কাউকে বললে তাকে খুন ও গুম করার হুমকি দেয়।

পরবর্তীতে তাকে বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে তাকে বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক করে এক পর্যায়ে তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়েন। পরে তাকে বিয়ের প্রলভন দেখিয়ে ৩০ জানুয়ারি ভাঙ্গা বাজারে নিয়ে একটি মেডিকেল সেন্টারে রেখে পালিয়ে যান।

লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ৩১ জানুয়ারি তিনি এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানায় গিয়ে ওসিকে সব খুলে বলেন। ওসি মুঠোফোনের সজলকে ডেকে আনে। তখন সজল তাকে পুলিশ কোয়াটারে নিয়ে গিয়ে কিছু কাগজপত্র ও সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে বলেন। তিনি স্বাক্ষর করার পর সজল বলে ‘তুমি আমাকে বিয়ে করেছে এবং তালাক দিয়েছো’। গত ১ ফেব্রুয়ারি তাকে মারপিট করে থানা থেকে বের করে দেয়।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রাম করে জানতে পারেন তিনি তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তিনি বাড়ি এসে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হয়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভাঙ্গা মামলা করতে গেলে থানা মামলাটি গ্রহণ না করে আদালতে করার পরামর্শ দেন।

অভিযোগ প্রসঙ্গে এএসআই সজল মাহমুদ বলেন, ওই নারীর সাথে তার বিয়ে হয়েছে, তার কাছে কাবিন নামাও আছে।

তিনি জানান, তার আগের স্ত্রী আছে। বড়স্ত্রীর সম্মতিতে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। ওই নারীকে তিনি তালাক দেননি।

বিস্ময় প্রকাশ করে সজল মাহমুদ জানান, এ ব্যাপারে ওই নারী আদালতে ধর্ষণের অভিযোগে কেন মামলা দিলেন তা তিনি ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) মো. হেলালউদ্দিন ভুইয়া এই প্রসঙ্গে বলেন, প্রশাসনিক কারণে এএসআই সজলকে গত ১০ দিন আগে ফরিদপুর পুলিশ লাইনস এ বদলি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশনা তারা এখনও পাননি। তবে শুনেছেন এই জাতীয় একটি মামলা হয়েছে।

নয়াশতাব্দী/জেডআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ