নয়া শতাব্দী অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি।
ফেনী যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণের সরঞ্জাম অপ্রতুল থাকায় প্রায় দুই বছর ধরে বেকার যুবক ও নারীরা সঠিক দক্ষতা অর্জনে ব্যাঘাত ঘটছে। কারিগরি শিক্ষা বিস্তার লাভে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর নিরলসভাবে কাজ করলেও এখন নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। উপকরণ সরবরাহ না থাকায় এ বিঘ্ন ঘটছে বলে কর্তৃপক্ষের দাবি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পর্যাপ্ত উপকরণ সংকট থাকার করণে যেমনি বাস্তবমুখী প্রশিক্ষণ নিতে পারছে না তেমনি প্রশিক্ষণার্থীরা স্বাভাবিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দেশের বেকার যুবক ও নারীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য কাজ করছেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর।
ফেনী শহরে কলেজ রোডের তমিজিয়া মসজিদের পূর্ব পাশে ভাড়া ঘরে চলছে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কার্যক্রম। সেখানে প্রতিদিন বেকার যুবক ও নারীদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন বিভাগে প্রশিক্ষণ নিতে আসে।
বিগত প্রায় দুই বছর যাবত চাহিদা অনুযায়ী উপকরণ না থাকার কারণে রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশন, ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড হাউজ ওয়ারিং এবং ইলেকট্রনিক্স প্রশিক্ষার্থীদের উপকরণ অপ্রতুলের কারণে ট্রেনিংয়ে ব্যাঘাত ঘটছে। এ ৩টি বিভাগে বছরে ২টি ব্যাচে ৩০ জন করে বছরে ৯০ জন বেকার যুবক প্রশিক্ষণ নিয়ে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক হিসেবে কাজ করছেন। কিন্তু সঠিক উপায়ে প্রশিক্ষণ না পাওয়ায় প্রতিদিন শিক্ষার্থীরা হতাশ হচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা বেকার হওয়ায় নিজেরা টাকা দিয়ে উপকরণ প্রদান করে প্রশিক্ষণ নেয়াও সম্ভব হচ্ছে না।
এ তিনটি কোর্সে শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফি ৩০০ টাকা করে আদায় করা হয়। চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ উপকরণ না থাকার করনে যথাযথ প্রশিক্ষণ বিঘ্ন ঘটছে বলে প্রশিক্ষার্থীদের অভিযোগ। বর্তমানে তিনটি বিভাগে উপকরণ সরবহার না থাকার কারণে ৩০ জনের স্থলে ১০ জন করে প্রশিক্ষার্থী ভর্তি নেয়া হচ্ছে।
রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনের একাধিক প্রশিক্ষার্থী জানান, দেশে শিক্ষা হারের তুলনায় কর্মসংস্থান কম হওয়ায় যেখানে উচ্চ শিক্ষিতরা চাকরি পাচ্ছেন না সেখানে অল্প শিক্ষিতরাতো চাকরি পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। সেই হিসেবে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অধীনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার জন্য ৬ মাসের রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশন কোর্সে ভর্তি হই। ভর্তি হওয়ার পর ট্রেনিং নিতে গিয়ে দেখা যায় গ্যাসসহ কাঁচামাল নেই। সেজন্য ইন্সট্রাক্টররা প্রশিক্ষার্থীদের যুগোপযোগি প্রশিক্ষণ প্রদানে ব্যাঘাত ঘটছে।
ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড হাউজ ওয়ারিংয়ের প্রশিক্ষাণার্থীরা জানান, আমরা প্রশিক্ষণ নিতে এসেও সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ নিতে পারছি না। ওয়ারিং কাজে ব্যবহারের উপরকরণ নেই। সে জন্য ইন্সট্রাক্টর আমাদের ফ্যাক্টক্যালি প্রশিক্ষণ দিতে পারছেন না। যেটুকু প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে এটি পর্যাপ্ত নয়। তাই সরকারিভাবে উপকরণ সরবরাহ করা হলে সঠিক নিয়মে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা যাবে।
রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশন ইন্সট্রাক্টর মো. সাইফুল ইসলাম জানান, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বেকার যুবক ও নারীদের দক্ষ জনশক্তি হিসেবে তৈরি করার লক্ষ্যে দারুণ উদ্যোগ। প্রতি ব্যাচে চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষার্থীরা ভর্তি হচ্ছে। প্রশিক্ষণের মান বাড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত কাঁচামাল প্রয়োজন। আগে চাহিদা অনুযায়ী ট্রেনিং উপকরণ সরবরাহ ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে উপকরণ অপ্রতুল। আশা করা যাচ্ছে দ্রুত সময়ের মাঝে চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ উপকরণ সরবরাহ হবে।
ফেনী যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবু জাফর নয়া শতাব্দীকে বলেন, বেকার যুব সমাজকে প্রশিক্ষণের আওতায় আনার জন্য উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন যাতায়াত ভাড়া হিসেবে ১শ’ টাকা প্রদান করা হয়। বাড়ি থেকে ডেকে এনে শিখানো এটি অবশ্যই আশাপ্রদ দিক। এক খাতে সরবরাহ কম থাকলেও অন্য খাত থেকে সমন্বয় করে চালানো হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, প্রশিক্ষণ উপকরণ স্বল্পতার কারণে ট্রেনিংয়ে বিঘ্ন ঘটছে। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। চাহিদা অনুযায়ী উপকরণ সরবরাহ করা হলে ট্রেনিং ফলপ্রসূ হবে।
নয়াশতাব্দী/জেডএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ