ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ৯ চৈত্র ১৪২৯, ৩০ শাবান ১৪৪৪

রেলওয়ের দেড় হাজার গেট কিপারের মানবেতর জীবনযাপন

প্রকাশনার সময়: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮:০৭

রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় জোনের ১ হাজার ৫০৫ জন গেটকিপার টানা ৭ মাস বেতন পাচ্ছেন না। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। প্রকল্পের ফান্ডে অর্থ না থাকায় বেতন প্রদানে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলেও গেট কিপারদের চাকরি স্থায়ীকরণ করা হচ্ছে না। যদিও এ পর্যন্ত তিন বার প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। প্রকল্পটির আওতায় এ সকল গেট কিপাররা ৫ বছর যাবৎ গেট কিপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। গত ৫ বছরে কোনরূপ বেতন ভাতাও বৃদ্ধি করা হয়নি। তাদের মাসিক বেতন ১৪ হাজার ৪৫০ টাকা।

খুলনার ফুলবাড়িগেট রেল ক্রসিংয়ের গেটকিপার হিসেবে দায়িত্ব পালনরত মো. মেহেদী হাসান বলেন, ধার দেনা করে পরিবার-পরিজন নিয়ে কোনমতে আমাদের চলতে হচ্ছে। মানসিকভাবে আমরা মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত। ৭ মাস বেতন পাইনা। কবে বেতন পাব তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। চাকুরীরও কোনও নিশ্চয়তা নেই। মানসিক চাপ নিয়ে বিপর্যস্ত অবস্থায় কিভাবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা এবং যানবাহন রক্ষা করবো -প্রশ্ন করেন তিনি।

রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলীয় জোন পাকশী'র বিভাগীয় প্রকৌশলী-১'র একটি প্রকল্পের আওতায় ওই গেটে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। মেহেদী হাসান আরো বলেন, গত রমজান মাসে চাকুরী স্থায়ীকরণের দাবিতে আমরা ১৭ দিন অনশন পালন করি। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। চাকরির ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা খুবই হতাশ।

মেহেদীর মতো ফুলবাড়িগেট রেলক্রসিংয়ে গেট কিপার হিসেবে দায়িত্বপালনরত, মো. সুমন শেখ, ইউনূস এবং রনজিতেরও একই রকম আক্ষেপ এবং হতাশা। তারা বলেন, রেলক্রসিংয়ের পাশে যে ছোট গার্ডরুম থেকে আমরা ডিউটি করি, সেখানে নেই কোন টয়লেট, পানি এবং বিদ্যুতের ব্যবস্থা। রেল ক্রসিংয়ে ডিজিটাল সিগনালও নেই। পুরোনো আমলের সিগন্যাল ব্যবস্থা মাধ্যমে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হয়। ট্রেন চলাচলের সময় গেট আটকাতে কোন কারণে সামান্য বিলম্ব হলে অনেকে আমাদের মারধর করতে উদ্যত হয়। আবার কোন কারণে গেট একটু আগে আটকালেও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়। এককথায় কর্মস্থলে আমরা কোনক্রমে নিরাপদ নয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেশের বিভিন্ন স্থানে রেল ক্রসিং পারাপারে জনসাধারণ সহ যানবাহনের দুর্ঘটনা এড়াতে অস্থায়ী এবং চুক্তিভিত্তিক এসকল গেটকিপার নিয়োগ দেওয়া হয়। সারাদেশের রেলের ঝুঁকিপূর্ণ লেভেল ক্রসিং এ দুর্ঘটনা এড়াতে দিবা-রাত্রি ২৪ ঘন্টা অতন্দ্র প্রহরীর ন্যায় দায়িত্ব পালন করছেন এ সকল গেট কিপার।

এ বিষয়ে রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলীয় জোন, পাকশী'র বিভাগীয় প্রকৌশলী-১'র গেট কিপার নিয়োগ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক বীরমল মন্ডল বলেন, প্রকল্পের ফান্ডে অর্থ না থাকার কারণে আমরা গেটকিপারদের বেতন দিতে পারছিনা। এমনকি গেটকিপারদের চাকুরী স্থায়ীকরণের কোনো নিশ্চয়তা আমরা দিতে পারব না। তবে তাদের চাকুরী স্থায়ীকরণের জন্য প্রচেষ্টা অভ্যতা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

নয়াশতাব্দী/এমএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ