নয়া শতাব্দী অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি।
প্রতিবছরই ফেব্রুয়ারির শুরুতে শীত পড়তির দিকের আবহাওয়ায় পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় ভিড় জমান হাজারো দর্শনার্থীরা। ঠিক এই সময়টাকেই পর্যটন মৌসুম হিসেবে গণ্য করেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তবে এবছর সম্প্রতি সময়ে উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশ এবং সাপ্তাহিক সরকারি ছুটিতে হঠাৎই কুয়াকাটায় আগমন ঘটেছে লাখো পর্যটকের।
আর ভ্রমণ পিপাসুরা বলছেন, কুয়াকাটায় পৌঁছাতে কোন ভোগান্তি না থাকায় সেতু পদ্মার বদৌলতে স্বল্প সময়ে এসে উপভোগ করতে পারছেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। আগত এসব পর্যটকদের ভিড়ে হাস ফাস অবস্থা সকল শ্রেণির বিক্রেতাদের। তবে বাড়তি পর্যটকের নিরাপত্তায় তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
চলতি মৌসুমে সপ্তাহিক ছুটিতে লাখো পর্যটকের আগমন ঘটেছে সাগরকন্যা খ্যাত পর্যটন নগরী কুয়াকাটায়। ফলে আগন্তুকদের পদভাড়ে এখন মুখর ব্যস্ততম এই নগরী। একই সাথে পর্যটকদের বহনে নিয়ে আসা বাড়তি গাড়ির ভিড়ে জট লেগেছে দীর্ঘ কয়েক কিলোমিটার সড়কে। তাই ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের অন্যসব পর্যটন কেন্দ্র গুলোর চেয়ে এ সৈকতে রেকর্ড সংখ্যক ভিড় করেছে দর্শনার্থীরা। যা বিগত বছরের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ফলে বিক্রি বেড়েছে খাবার হোটেলসহ সব ধরনের ব্যবসায়ীক স্পটে। এছাড়া বুকিং রয়েছে কুয়াকাটার সব শ্রেণির হোটেল-মোটেল।
এদিকে প্রিয়জনের সাথে কুয়াকাটায় ভ্রমণে এসে স্বপ্নের ডানা মেলেছে দূর-দূরান্ত থেকে আগত পর্যটকরা। সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ে গাঁ ভাসিয়ে মেতেছেন উম্মাদনায়। কেউ কেউ উপভোগ্য দৃশ্য স্মরণীয় করে রাখতে ক্যামেরায় ধরা দিচ্ছেন বাহারি ঢংয়ে। এছাড়া সৈকতের দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার বালিয়ারীতে উষ্ণতা ছড়াচ্ছেন সব বয়সীরা।
খুলনা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক আমিনুল-রেখা দম্পতি জানান, ছেলে উচ্চমাধ্যমিক পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় খুশিতে পরিবার নিয়ে কুয়াকাটায় এসেছি। তবে এখানে এতো মানুষ হবে বুঝিনি। চারিদিকে শুধু মানুষ আর আর মানুষ। ভিড়ের মধ্যে একটা আনন্দ খুজেঁ পাচ্ছি। ঢাকার ফার্মগেট এলাকা থেকে আসা মাহিমা জানান, কুয়াকাটায় আসার সখ ছিল দীর্ঘদিনের। তাই বাবা মায়ের সাথে এসেছি। কতটা যে ফিল হচ্ছে বলে বোঝাতে পারবো না, এখানে প্রাকৃতিক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য হৃদয় ছুঁয়েছে ।
কেবল কুয়াকাটার সৈকতই নয়, আনোগোনা বেড়েছে কুয়াকাটার ঐতিহ্যবাহী রাখাইন বৌদ্ধবিহার, ইলিশপার্ক, ঝাউবন, লেম্বুরবন, গঙ্গামতির চরসহ দর্শনীয় স্থানগুলোতে। আর সন্ধ্যার পড়ে বাড়তি ভিড় সামলাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে ফিশ ফ্রাইয়ের দোকান মালিকদের। তারা বলছেন, কয়েক বছরের মধ্যে এবছর চলতি মৌসুমে বেশি পর্যটকের আগমন ঘটেছে কুয়াকাটায়। ফলে বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুন।
ফিশফ্রাই দোকানি রহিম জানান, আমার দোকানে আগে ফ্রাইয়ের সাথে ১ থেকে দেড়শো পরাটা বিক্রি হতো। কিন্তু দুদিন যাবৎ দম ফেলতে পারছি না। দোকানে যা জমায়েত করি। কিছু সময়ের মধ্যেই তা বিক্রি হয়ে যায়। আমরা চাই সারা বছরই যেন এমন ভিড় লেগে থাকে।
কুয়াকাটা আবাসিক হোটেল-মোটেল অর্নাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, এর আগে কখনোই কুয়াকাটায় এতোটা পরিবহনের ভিড় আমি দেখিনি। বিগত দিনের সকল রেকর্ড ভঙ্গ হয়েছে গত দুদিনে। সেতু পদ্মায় ভর করে গোটা কুয়াকাটা জুড়েই পর্যটকদের পদভারে মুখরিত। সব হোটেল-মোটেল আগে ভাগেই বুকিং ছিল। অনেক পিকনিক পার্টি রুম খালি না পেয়ে সড়কের পাশেই তাবু সাটিয়ে রান্না এবং আনন্দ করছে। ট্যুরিষ্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের পুলিশ সুপার আশরাফুর রহমান জানান, রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক কুয়াকাটায় আগমন করেছেন। আমরা তাদের সেবায় সর্বদা তৎপর রয়েছি।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ