নয়া শতাব্দী অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি।
বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে বেছে নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আপসহীন, বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ার এবং অতীত কর্মজীবনে নিষ্ঠা-সততা- দক্ষতার কারণে মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের সম্মুখসারির এ যোদ্ধাকে বেছে নেয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে। আইন বিষয়ে দক্ষ চুপ্পু দেশের নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে সুন্দরভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবেন বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন দলটির নেতারা। তারা মনে করেন, আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের দেয়া সর্বসন্মত সিদ্ধান্তের আলোকে দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেরা ব্যক্তিকেই বেছে নিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহম্মদ ফারুক খান এমপি এবং আবদুর রহমানের সঙ্গে কথা হয় যারা নির্বাচন কমিশনে রাষ্ট্রপতি পদের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়া আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলে ছিলেন। এছাড়া রোববার সকালে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দলীয় চূড়ান্ত মনোনয়ন ঘোষণার সময় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনেও উপস্থিত ছিলেন তারা।
সাবেক সরকারি কর্মকর্তা চুপ্পুকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে কেন পছন্দ করা হয়েছে এমনটি জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহম্মদ ফারুক খান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে তিনি যুবক বয়সেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
চুপ্পুর রাজনৈতিক জীবনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ১৯৬৬ সালে তিনি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। জেলা যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের আগেই তিনি দেশের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময়কালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের পরেও তিনি লেখাপড়ার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। যার কারণে পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর তাকে তিন বছর কারাবরণ করতে হয়। অনেক অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হন তিনি।
সাহাবুদ্দিন চুপ্পু খুবই মেধারী উল্লেখ করে ফারুক খান বলেন, জেল থেকে বের করে তিনি লেখাপড়া শেষ করে যোগ্যতার স্বাক্ষর থেকে বিসিএস জুডিশিয়াল সার্ভিসে যুক্ত হন। কর্মজীবনে তিনি সততা, দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবেও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন নিষ্ঠা ও সম্মান নিয়ে। পরে তাকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদেরও সদস্য করা হয়েছে।
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে মুহম্মদ ফারুক খান বলেন, ১৯৯৮ সালে আমার নেতৃত্বে একটি টিম কয়েকটি দেশের সংসদের কার্যক্রম পরিদর্শনের জন্য পাঠানো হয়। ওই টিমে তিনিও (চুপ্পু) সদস্য ছিলেন। আমরা ব্রিটেন, সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট পরিদর্শন করি। তখন থেকে তার সঙ্গে আমার পরিচয়। ওই সফরে আমি তার দক্ষতার প্রমাণ পেয়েছি। তিনি ব্যক্তিগতভাবে একজন অমায়িক, ভদ্র ও মার্জিত মানুষ। ব্যক্তিগতভাবে মনে করি রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি বেস্ট চয়েজ। তিনি একজন ভালো রাষ্ট্রপতি হবেন। ব্যক্তিগতভাবে আইনজীবী ও সাবেক জজ হওয়ায় আইনগত বিষয়ে তিনি দক্ষতার স্বাক্ষর রাখবেন। দেশের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি অনুগত্য, দেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস এবং ব্যক্তিগত দক্ষতা ও অতীতের কর্মময় জীবনের কারণেই তাকে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আমি মনে করি এটা বেষ্ট চয়েজ।
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান মনে করেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আপসহীন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সম্মুখসারির যোদ্ধা, বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ইতিহাসের কারণেই সবার মতামতের ভিত্তিতে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে রাষ্ট্রপতি মনোনয়ন দিয়েছেন।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ